সম্পর্কের টানাপোড়েন: বুটেক্সে প্রকাশ্যে একে অপরকে মারধর, ঘুষি-থাপ্পড় দুই শিক্ষার্থীর
বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুটেক্স) ফেব্রিক ও ইয়ার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দুই শিক্ষার্থীর মধ্যে ঘটে যাওয়া এক মারধরের ঘটনায় শিক্ষাঙ্গনে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) দুপুরে একাডেমিক বিল্ডিংয়ের নিচে ঘটে যাওয়া ঘটনাটি শুধু সহিংসতার নয়—পেছনে রয়েছে পুরনো সম্পর্ক, সম্পর্কচ্ছেদ, ভুল বোঝাবুঝি এবং দীর্ঘ দিনের মানসিক চাপ। সিসিটিভি ফুটেজ ও প্রত্যক্ষদর্শীর ভাষ্য অনুযায়ী, ইয়ার্ন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শিক্ষার্থী যায়েদ ইবনে জাফর প্রকাশ্যে সহপাঠী ফারিয়া রায়ার সঙ্গে কথা বলার সময় তার কানে আঘাত করেন। ফারিয়ার ভাষ্য অনুযায়ী, বিষয়টি ছিল দীর্ঘ দিনের হয়রানির পরিণতি। সম্পর্ক শেষ হওয়ার পরও যায়েদ তাকে অপদস্থ করে, গুজব ছড়ায় এবং মানসিকভাবে হয়রানি করে আসছিলেন।
প্রথম দফার ঘটনার পর ফারিয়া ও তার সহপাঠীরা প্রক্টর বরাবর অভিযোগ দিলে তারা তা উপাচার্যকে জানাতে রওনা হন। ঠিক সেই সময় দ্বিতীয় দফার ঘটনাটি ঘটে প্রশাসনিক ভবনের সামনে, কেমিস্ট্রি ল্যাবের পাশে। সেখানেই পুনরায় মুখোমুখি হন ফারিয়া ও যায়েদ। ক্রুদ্ধ দৃষ্টিতে তাকানোয় ক্ষিপ্ত হয়ে ফারিয়া যায়েদকে থাপ্পড় দেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, এরপর যায়েদ সম্পূর্ণভাবে ক্ষিপ্ত হয়ে এলোপাতাড়ি ঘুষি-থাপ্পড় মারতে শুরু করেন। এতে শুধু ফারিয়াই নন, তার সহপাঠী আলহাজ্ব ও মেরাজও আহত হন। ফারিয়ার চোখের নিচে আঘাত লাগে, নাক ফেটে যায়, মেরাজের মুখ কেটে যায় এবং আলহাজ্বের শার্ট ছিঁড়ে যায়। পরে উত্তেজিত হয়ে আলহাজ্ব কাঠ হাতে নেয়, যদিও উপস্থিতরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
অভিযুক্ত শিক্ষার্থী যায়েদের পরিবারের দাবি, রায়া নাকি তাকে জোর করে সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন এবং পরবর্তীতে হুমকি দিয়েছিলেন। তবে ফারিয়ার ভাষ্য ভিন্ন—তিনি বলছেন, সম্পর্ক থাকলেও সেটি সমঝোতায় শেষ হয়। এরপর থেকেই যায়েদ বিভিন্নভাবে তাকে অপমান, অপবাদ ও মানসিক চাপে ফেলেন। ইতোমধ্যে ফারিয়ার পরিবার সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছে এবং ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চেয়েছে। বুটেক্স প্রশাসন এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য না করলেও ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। শিক্ষার্থীদের একাংশ এ ঘটনাকে নারীর নিরাপত্তা ও সম্মানের প্রশ্নে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করছে। এখন দেখা যাক, প্রশাসন কতটা দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন