Choose Your Language

সোমবার, ২০ জানুয়ারী, ২০২৫

মেডিকেল ভর্তিতে অযৌক্তিক কোটা প্রথার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

 


শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অযৌক্তিক কোটা প্রথার বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে বিরূপ প্রতিক্রিয়া চললেও, এবার তা নতুন মাত্রায় পৌঁছেছে। মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় অসংগতিপূর্ণ ফলাফলের কারণে ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা। তারা রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জড়ো হয়ে পুনঃপরীক্ষা ও ফলাফল পুনঃপ্রকাশের জোর দাবি জানান। তাদের দাবি, কোটা সুবিধার মাধ্যমে কম নম্বর পাওয়া শিক্ষার্থীদের সুযোগ দেওয়া হয়েছে, যা মেধার অবমাননা। তারা স্লোগানে উচ্চারণ করেন, ‘৪০ পেয়ে চান্স হয়, ৭৩ কেন বাদ?’

সোমবার (২০ জানুয়ারি) সকাল থেকে বিভিন্ন মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা শহীদ মিনারে অবস্থান নেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীরা হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে অংশগ্রহণ করেন। তাদের প্ল্যাকার্ডগুলোতে লেখা ছিল:

  • ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’,
  • ‘মেডিকেলে কোটা কেন, প্রশাসন জবাব চাই’,
  • ‘আমার সোনার বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’,
  • ‘আবু সাঈদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’।

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ডা. মেজর আব্দুল ওহাব। তিনি বলেন, “গতকালের মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় এমন অনিয়ম হয়েছে, যা নজিরবিহীন। যেখানে ৪০ বা ৪১ পেয়ে কেউ ভর্তি হয়েছে, সেখানে দ্বিগুণ নম্বর পেয়েও অনেকে বাদ পড়েছে। এটা মেধাবীদের প্রতি একধরনের অবিচার। প্রশাসন মেধাকে অবমূল্যায়ন করছে।” তিনি আরও দাবি করেন, প্রশাসনে স্বৈরাচারী মানসিকতার কিছু লোকের প্রভাব আছে, যার প্রতিফলন দেখা গেছে পরীক্ষার ফলাফলে। “আজকের মধ্যে কোটা প্রথার বিলুপ্তি এবং পুনঃফল প্রকাশ না হলে আরও বড় আন্দোলন গড়ে তোলা হবে”, বলেন তিনি।

এ সময় শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “তোমাদের অধিকার আদায় করতে হলে রাজপথেই লড়তে হবে। সুশাসনের জন্য সংগ্রাম সবসময় রাজপথ থেকেই আসে।”

আরো পড়ুন: ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ: পুনঃনিরীক্ষার আবেদন প্রক্রিয়া শুরু কাল


স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী আরিব হোসেনের ভাষায়, “আগে কোটা সুবিধা থাকলেও তা ছিল তুলনামূলক ন্যায্য। কিন্তু এবার নাতি-নাতনি কোটায় এমন অসঙ্গতি দেখা গেছে, যেখানে কাট মার্ক থেকে ৩০-৩৫ নম্বর কম পাওয়া শিক্ষার্থীরা সরকারি মেডিকেলে সুযোগ পেয়েছে। এটা মেধাবীদের জন্য চরম অসম্মান।” তিনি বলেন, “আমরা মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ সব ধরনের কোটার বিলুপ্তি চাই।”

এই আন্দোলন দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় সাম্য ও ন্যায়বিচারের দাবিকে নতুন করে সামনে নিয়ে এসেছে। শিক্ষার্থীদের মতে, মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে মূল্যায়নই সঠিক শিক্ষাব্যবস্থার মূল স্তম্ভ হওয়া উচিত।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Post Top Ad