২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে দেশের সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষায় মুক্তিযোদ্ধা কোটায় শুধুমাত্র মুক্তিযোদ্ধা এবং বীরাঙ্গনার সন্তানদের ভর্তির সুযোগ দেয়া হবে। নাতি-নাতনিদের জন্য এই কোটার সুবিধা বাতিল করা হয়েছে।
সোমবার (২০ জানুয়ারি) এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (চিকিৎসা শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. রুবীনা ইয়াসমিন।
তিনি জানান, ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে মুক্তিযোদ্ধা কোটার আওতায় মোট আসন সংখ্যা ২৬৯টি নির্ধারিত হয়েছে। এর মধ্যে ১৯৩ জন শিক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। তবে, তাদের মধ্যে অনেকের প্রাপ্ত নম্বর ৪০-৪৬ এর মধ্যে, যা নিয়ে বিভিন্ন মহলে সমালোচনা শুরু হয়েছে।
গত রবিবার একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে, যেখানে উল্লেখ করা হয়, ‘৭০ নম্বর পেয়েও চান্স হলো না মেডিকেলে, কোটায় ৪১ পেয়েও সুযোগ’—এই শিরোনামে মুক্তিযোদ্ধা কোটার ভিত্তিতে প্রাপ্ত নম্বরের বিশাল পার্থক্য নিয়ে আলোচনা হয়। প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয় এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই বিষয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা।
কোটা ব্যবস্থার পরিবর্তন
অধ্যাপক ডা. রুবীনা ইয়াসমিন বলেন, "আমরা শিক্ষার্থীদের ক্ষোভের বিষয়টি জেনেছি। তবে, ৫ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহাল রাখার বিষয়ে হাইকোর্টের নির্দেশনা রয়েছে, এবং এই নির্দেশনার কারণে আমাদের পক্ষে কোটার নিয়মে পরিবর্তন আনা সম্ভব হয়নি।"
তিনি আরও জানান, ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় নাতি-নাতনিদের অন্তর্ভুক্ত করা হবে না। শুধুমাত্র মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনার সন্তানরাই এই সুবিধার আওতায় আসবেন। এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করার জন্য ভর্তিচ্ছুদের তথ্য যাচাই করা হবে। "স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের একটি টিম এবার সরাসরি তথ্য যাচাই করবে, যা আগে সংশ্লিষ্ট মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ করত," যোগ করেন তিনি।
ফাঁকা আসন মেধাতালিকা থেকে পূরণ
মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ফাঁকা থাকা আসনগুলো কীভাবে পূরণ করা হবে, সে বিষয়ে অধ্যাপক রুবীনা ইয়াসমিন জানান, "কোটায় শূন্য থাকা আসনগুলো মেধাতালিকা থেকে পূরণ করা হবে। এ জন্য শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ধৈর্য ধারণ করতে হবে।"
ভর্তি পরীক্ষার পরিসংখ্যান
গত ১৭ জানুয়ারি সারা দেশে একযোগে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এই পরীক্ষায় মোট আবেদনকারী ছিলেন ১ লাখ ২৫ হাজার ২৬১ জন। এর মধ্যে পরীক্ষায় অংশ নেন ১ লাখ ৩১ হাজার ৭২৯ জন। উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৬০ হাজার ৯৫ জন, যার মধ্যে পাসের হার ৪৫.৬২ শতাংশ। উত্তীর্ণদের মধ্যে ২২ হাজার ১৫৯ জন ছিলেন ছেলে এবং ৩৭ হাজার ৯৩৬ জন মেয়ে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন