রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ভর্তি পরীক্ষার প্রাথমিক আবেদন ৫ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়ার কথা ছিল, তবে কর্তৃপক্ষ জরুরি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে তা স্থগিত ঘোষণা করেছে। এই পরীক্ষা কবে থেকে শুরু হবে, তা এখনও নিশ্চিত নয়। পোষ্য কোটা নিয়ে শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনড় অবস্থান এবং বিজ্ঞপ্তি সংক্রান্ত জটিলতার কারণে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, এমনটি জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।
৪ জানুয়ারি রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক ড. আখতার হোসেন মজুমদার স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ভর্তি কার্যক্রম স্থগিত হওয়ার বিষয়টি জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে প্রথমবর্ষ স্নাতক/স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে আবেদনের বিষয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তির ১(ক)-এ উল্লিখিত অনলাইনে প্রাথমিক আবেদন শুরুর কার্যক্রম পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত স্থগিত করা হলো।
স্থগিতের সুনির্দিষ্ট কারণ জানানো না হলেও, কর্তৃপক্ষের মতে বিজ্ঞপ্তি নিয়ে জটিলতার কারণে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্টদের ধারণা, পোষ্য কোটা বাতিলের কারণে কর্মচারীদের চলমান আন্দোলন এবং শিক্ষকদের সহযোগিতা না পাওয়ায় এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে কবে থেকে পরীক্ষা শুরু হবে, সে বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি।
ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী সামিয়া তাসনিম বর্ষা বলেন, "হঠাৎ ভর্তি কার্যক্রম স্থগিত হওয়ায় আমরা অনিশ্চয়তার মধ্যে আছি, যা আমাদের ওপর বাড়তি চাপ তৈরি করছে। আমরা চাই, দ্রুত ভর্তি কার্যক্রম শুরু হোক।"
নতুন করে ভর্তি কার্যক্রম শুরু হতে কত সময় লাগবে জানতে চাইলে জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক আখতার হোসেন মজুমদার বলেন, এ বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। একই সুরে কথা বলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মোহা. ফরিদ উদ্দিন খান। তিনি বলেন, "এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি, তবে আশা করছি দ্রুতই শুরু হবে।"
পোষ্য কোটা বাতিলের কারণে স্থগিত হয়েছে কিনা জানতে চাইলে উপ-উপাচার্য বলেন, "কর্মচারীদের আন্দোলনের কারণে নয়, পোষ্য কোটা বাতিলের কারণে পত্রিকায় পুনরায় বিজ্ঞাপন দিতে হবে।" তিনি আরও বলেন, "যেহেতু পত্রিকায় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে যে বিজ্ঞাপন গেছে, সেখানে পোষ্য কোটা ১ শতাংশ লেখা ছিল, তাই ভর্তি কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সংশোধনী বিজ্ঞাপন দিতে হবে।"
উল্লেখ্য, প্রায় এক মাস ধরে পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছেন। এর ফলে, প্রশাসন ভর্তি পরীক্ষায় শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের সন্তানের কোটা বাতিল করে কর্মচারীর সন্তানদের জন্য ১ শতাংশ কোটা রাখে। তবে শিক্ষার্থীদের চাপের মুখে উপাচার্য অধ্যাপক ড. সালেহ্ হাসান নকীব পোষ্য কোটা পুরোপুরি বাতিল ঘোষণা করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে ৮ ও ৯ জানুয়ারি পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করেন, এর আগে ৭ জানুয়ারি দুই ঘণ্টার অবস্থান কর্মসূচি এবং ৬ জানুয়ারি এক ঘণ্টার মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন তারা।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন