শিক্ষা বিভাগ নবম শ্রেণি থেকে বিভাগ বিভাজন পুনরায় তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা করছে। এই পরিকল্পনা অনুযায়ী, নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য কিছু বিষয় বাধ্যতামূলক রেখে বাকি বিষয়গুলো নির্বাচনের জন্য উন্মুক্ত রাখা হবে। শিক্ষার্থীরা তাদের আগ্রহ অনুযায়ী নির্দিষ্ট সংখ্যক বিষয় বাছাই করতে পারবে।
আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এতে, এবারের মতো বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে বিভক্তি থাকবে না। শিক্ষার্থীরা তাদের ক্যারিয়ার পরিকল্পনা অনুযায়ী বাধ্যতামূলক বিষয়গুলোর পাশাপাশি পদার্থ, রসায়ন, অর্থনীতি বা অন্যান্য বিষয় বেছে নিতে পারবে।
এখন পর্যন্ত অনেক শিক্ষার্থী শিখন ঘাটতির কারণে পরবর্তী শ্রেণিতে ওঠে এবং এখানকার শিক্ষকদের মধ্যেও দক্ষতার অভাব রয়েছে। তাই নবম শ্রেণির মতো পর্যায়ে এত বৈচিত্র্য আনার সিদ্ধান্ত নিয়ে আরও গভীরভাবে চিন্তা-ভাবনা করা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক এস. এম. হাফিজুর রহমান।
গত বছর, নতুন শিক্ষাক্রমের আওতায়, নবম শ্রেণি থেকে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাজন তুলে দেওয়া হয়েছিল, তবে সেই সময় শিক্ষার্থীদের বিষয় নির্বাচনের কোনো স্বাধীনতা ছিল না। সকল শিক্ষার্থীকে ১০টি অভিন্ন বিষয় বাধ্যতামূলক পড়তে হচ্ছিল। তবে ভবিষ্যতে, একাদশ শ্রেণি থেকে বিভাজন শুরু হবে।
রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর, নতুন শিক্ষাক্রম বাদ দেওয়া হয় এবং গত বুধবার শুরু হওয়া নতুন শিক্ষাবর্ষে আবারো পুরোনো পদ্ধতিতে বিভাগ বিভাজন চালু হয়েছে। এতে, শিক্ষার্থীরা বিজ্ঞান, মানবিক বা ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের বিষয়গুলির মধ্যে থেকে নির্ধারিত সংখ্যক বিষয় বাছাই করবে এবং ঐচ্ছিক বিষয়ও নেওয়ার সুযোগ থাকবে।
এনসিটিবি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নতুন পরিকল্পনায় শিক্ষার্থীদের জন্য ১০টি বিষয় থাকবে, যার মধ্যে বাংলা, ইংরেজি, গণিত, আইসিটি, ধর্ম বিষয়গুলো বাধ্যতামূলক থাকবে এবং বাকি বিষয়গুলো থেকে পছন্দ করে শিক্ষার্থীরা নির্বাচিত বিষয় বেছে নেবে।
এনসিটিবির একজন কর্মকর্তা বলেছেন, অনেক দেশে একমুখী শিক্ষাব্যবস্থা থাকলেও সেখানে শিক্ষার্থীদের জন্য বিকল্প বিষয়ও রাখা হয়। বাংলাদেশেও যদি বিষয় নির্বাচনের স্বাধীনতা দেয়া হয়, তবে শিক্ষার্থীরা তাদের ভবিষ্যত ক্যারিয়ার পরিকল্পনা অনুযায়ী বিষয় বেছে নিতে পারবে।
তবে, এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে, বিশেষ করে ক্লাস পরিচালনায় শিক্ষক ও অবকাঠামোর অভাব। শিক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, এই ধরনের বৈচিত্র্য নবম শ্রেণিতে আনার ক্ষেত্রে কিছু ঝুঁকি থাকতে পারে, তাই এটি আরও গভীরভাবে ভাবা প্রয়োজন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন