আগামী এক মাসের মধ্যে সাত কলেজের সমন্বয়ে একটি স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রজ্ঞাপন জারি করে তার অধীনে ২০২৪-২৫ সেশনের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত করার দাবি জানিয়েছেন সাত কলেজের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। তারা বলছেন, যদি ভর্তি পরীক্ষায় আসন সংখ্যা অর্ধেকেরও বেশি কমানো হয় অথবা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে নতুন ভর্তি পরীক্ষা আয়োজিত হয়, তবে তারা আবারও রাজপথে আন্দোলন করবে।
শনিবার (৪ জানুয়ারি) দুপুরে ঢাকা কলেজের শহীদ মিনারের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এ সময় লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সাত কলেজকে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর আন্দোলনের মুখপাত্র আব্দুর রহমান।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে আমাদের দীর্ঘদিনের শোষণ ও বঞ্চনা অবসান হতে যাচ্ছে। আমরা দীর্ঘদিন ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তি বাতিল করে সাত কলেজের সমন্বয়ে স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়ে আন্দোলন করে আসছিলাম, এবং সরকার আমাদের সেই দাবি গুরুত্ব সহকারে গ্রহণ করেছে। সরকার সাত কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পৃথক করে এবং কলেজগুলোর জন্য স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের কাঠামো তৈরি করতে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করেছে।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা মনে করি, এই কমিটিকে চার মাস সময় দেওয়া অতিরঞ্জিত। বিশেষজ্ঞ কমিটিকে ৩০ কার্যদিবস অর্থাৎ এক মাসের মধ্যে সাত কলেজের সমন্বয়ে একটি স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রজ্ঞাপন জাতির সামনে প্রকাশ করতে হবে। একই সঙ্গে ২০২৪-২৫ সেশনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তি বাতিল করে নতুন ভর্তি পরীক্ষা নিতে হবে।”
তিনি আরও দাবি করেন, "স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২৪-২৫ সেশনের ভর্তি পরীক্ষা ছাড়া সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত অবস্থায় কোনো ভর্তি পরীক্ষা হতে দেবেন না। যদি বিশেষজ্ঞ কমিটি সদিচ্ছা নিয়ে কাজ করে, তবে আগামী এক মাসের মধ্যে নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের রূপরেখা প্রকাশ এবং ২০২৪-২৫ সেশনের ভর্তি পরীক্ষা আয়োজন সম্ভব। তবে যদি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার কোনো ষড়যন্ত্র করে, আমরা আবারও আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবো।”
এর আগে, সাত কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে গত ২৪ অক্টোবর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিবকে (কলেজ) সভাপতি করে একটি ১৩ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। পরবর্তীতে গত ৩০ ডিসেম্বর আরেকটি উচ্চপর্যায়ের বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করা হয়, যার কাজ ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সাত কলেজের জন্য একটি স্বতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো প্রণয়ন করা। এই কমিটির প্রধান হচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান এবং সদস্যরা হলেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য এবং ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক ড. তানজিমউদ্দিন খান।
এই কমিটিকে চার মাসের মধ্যে কাজ শেষ করার নির্দেশনা দেওয়া হলেও শিক্ষার্থীরা দাবি করছেন, এক মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে হবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন